বঙ্গোপসাগরের মিথেন গ্যাসের (গ্যাস হাইড্রেন্ট) অস্তিত্ব পেয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়াও বঙ্গোপসাগরে সামুদ্রিক শৈবালের বাণিজ্যিক উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান গবেষক দলের প্রধান। বঙ্গোপসাগরে প্রায় ১৭ থেকে ১০৩ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস হাইড্রেট রয়েছে বলে গবেষক দলের ধারণা।
বুধবার (৫ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ‘গ্যাস হাইড্রেন্ট ও সামুদ্রিক জেনেটিক সম্পদের ওপর নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে এক যৌথ জরিপে গ্যাস হাইড্রেটের সন্ধান পেয়েছে মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট।
গবেষণা ইউনিটের প্রধান খুরশীদ আলম বলেন, ‘আমরা এখনও পুরো এলাকা জরিপ করতে পারিনি। তবে যত টুকুতে করতে পেরেছি তাতে আমরা ধারণা করছি ১৭ থেকে ১০৩ টিসিএফ (ট্রিলিয়ন ঘনফুট) গ্যাস হাইড্রেট এখানে রয়েছে।’ বুধবার মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধান কাজ চালানোর জন্য একমাত্র ডেডিকেটেড মার্কিন ফেডারেল সংস্থা এনওএএ ওশেন এক্সপ্লোরেশন-এর তথ্যানুসারে, গ্যাস হাইড্রেট তথা মিথেন গ্যাস মূলত উচ্চচাপ ও নিম্ন তাপমাত্রায় গঠিত জমাট বরফ আকৃতির এক ধরনের কঠিন পদার্থ। এটি স্তূপীকৃত বালির ছিদ্রের ভেতরে ছড়ানো স্ফটিক আকারে অথবা কাদার তলানিতে ক্ষুদ্র পিণ্ড, শিট বা রেখা আকারে বিদ্যমান থাকে।
আরও পড়ুন : বছরের শুরুতেই আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী
মহীসোপানের প্রান্তসীমায় ৩০০ মিটারের বেশি গভীরতায় সমুদ্রের তলদেশের নিচে গ্যাস হাইড্রেট পানি ও মাটির চাপে মিথেন বা স্ফটিক রূপে বিরাজ করে, যা সাধারণত ৫০০ মিটার গভীরতায় স্থিতিশীল অবস্থায় থাকে। স্থিতিশীল গ্যাস হাইড্রেটসমৃদ্ধ এ অঞ্চল সমুদ্রের তলদেশ থেকে প্রায় ১০ থেকে ১০০ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে।
প্রাকৃতিকভাবে কিছু সামুদ্রিক পলিতে এবং ভূগর্ভস্থ চিরহিমায়িত অঞ্চলে গ্যাস হাইড্রেট গঠিত হয়।
হাইড্রেটের মজুদ বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ। কয়লা, তেল ও প্রচলিত প্রাকৃতিক গ্যাসের সম্মিলিত মজুদে যে পরিমাণ কয়লা থাকে, গ্যাস হাইড্রেট মজুদে তার প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ কার্বন থাকতে পারে।