তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ জনগোষ্ঠি হিসাবে তৈরির করার লক্ষ্যে শেভরনের অর্থায়নে সুইসকন্টাক্ট-এর উত্তরণ প্রকল্প খুলনা শিপইয়ার্ডের সাথে একটি চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করে। এই চুক্তি পত্রের আওতায় উত্তরণ প্রকল্প বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক মানের ওয়েল্ডিং ট্রেনিং শুরু করবে। উত্তরণের তিনটি লক্ষ্যের একটি হলো সরকারি একটি ট্রেনিং প্রতিষ্ঠানকে আধুনিকায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক পর্যায়ের আধুনিক ওয়েল্ডিং ট্রেনিং শুরু করা।
উত্তরণ প্রকল্প খুলনা শিপইয়ার্ডের অধীনে পরিচালিত টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার আধুনিকীকরণের মাধ্যমে তরুণদের জন্যে আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন এই ওয়েল্ডিং প্রশিক্ষণ শুরু করবে। বর্তমানে দেশে এবং বিদেশে ৩জি এবং ৪জি লেভেলের ওয়েল্ডিং ট্রেনিংয়ের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে, কিন্তু দেশে প্রচলিত প্রশিক্ষণ সমূহ আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন নয়। ফলে বাংলাদেশী শ্রমিকরা আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পরছে। এই পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপ তরুণদের জন্যে সম্ভাবনার এক নতুন দ্বার উন্মোচন করতে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানটি ওয়েস্টিন ঢাকা হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়। এই অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কোমোডোর এম জাকিরুল ইসলাম (ই), এনডিসি, পিএসসি, বিএন, ম্যানেজিং ডিরেক্টও, খুলনা শিপইয়ার্ড, এরিক এম ওয়াকার, প্রেসিডেন্ট শেভরন বাংলাদেশ, মোহাম্মদ শাহিনুর ইসলাম, ডিরেক্টর পিএসসি, পেট্রোবাংলা, মুহাম্মদ ইমরুল কবির, পরিচালক, কর্পোরেট অ্যাফেয়াসর্, শেভরন বাংলাদেশ এবং মুজিবুল হাসান, কান্ট্রি ডিরেক্টর সুইসকন্ট্যাক্ট।
শেভরন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট জনাব এরিক এম ওয়াকার, বলেন, “দুই প্রতিষ্ঠানের দক্ষতা, কারিগরি তত্বাবধান এবং সাংগঠনিক ক্ষমতাই এই আয়োজনের মূল ভিত্তিকে আরো সমৃদ্ধ করতে সক্ষম হবে। প্রকল্পের সময়কাল শেষ হবার পরেও প্রকল্প আনিত পরিবর্তনগুলো স্থায়ী হয়ে -কারিগরি দক্ষতার চাহিদার ভিত্তিতে চাকরির বাজারে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করে, ভবিষ্যত বিকাশের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করবে।”
কোমোডোর এম জাকিরুল ইসলাম (ই), এনডিসি, পিএসসি, বিএন, ম্যানেজিং ডিরেক্টও, খুলনা শিপইয়াড, বলেন, “আমি শেভরন, সুইসকন্ট্যাক্ট এবং উত্তরণ প্রকল্পকে ধন্যবাদ দিতে চাই এই আয়োজনে আমাদের অংশীদার করার জন্য। আমাদের প্রচুর জনবল থাকলেও দক্ষ জনবল এর অভাব রয়েছে। জনবল কে দক্ষ করে গড়ে তুললে দেশের অর্থনীতিতে তারা ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। আমরা এমন আয়োজনের সাথে যুক্ত হয়ে গর্বিত, যেখানে শেভরনের অর্থায়নে এবং সুইসকন্টাক্টের সহায়তায় দক্ষ জনবল গড়ে উঠছে।”
মোহাম্মদ শাহিনুর ইসলাম, ডিরেক্টর পিএসসি, পেট্রোবাংলা, বলেন, “শেভরন বাংলাদেশ পার্টনারশীপ ইনিশিয়েটিভ (বিপিআই) এর মাধ্যমে যে কাজগুলো করছে তা বাংলাদেশের আত্ম-সামাজিক অবস্থার উন্নতির ক্ষেত্রে অনেক অবদান রাখছে।”
কান্ট্রি ডাইরেক্টর সুইসকন্টাক্ট বাংলাদেশ জনাব মুজিবুল হাসান বলেন, “আজকের এই চুক্তি উত্তরণের অন্যন্য সাধারণ হবার আর একটি উদাহরন হয়ে থাকবে, যেখানে প্রাইভেট সেক্টরের অর্থায়নে এবং এনজিও সেক্টর কর্তৃক বাস্তবায়নকৃত একটি উন্নয়ন প্রকল্প সরকারের সাথে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক মানের ট্রেনিং শুরু করতে যাচ্ছে “।
এই মুহূর্তে, বাংলাদেশের মোট ৪.৪ মিলিয়ন জনগোষ্ঠি অর্থনৈতিকভাবে সক্রিয় রয়েেেছ এবং আমাদের শ্রমশক্তি প্রতি বছর ১.৩ মিলিয়ন হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে, কর্মরত রয়েছে ৬০.৭ মিলিয়ন জনগোষ্ঠি। সুতরাং, জনসংখ্যার এক বিশাল অংশ বেকারত্বের অভিশাপে ভুগছে, এবং কোভিড অতিমারীর কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।
উত্তরণ – উন্নত জীবনের লক্ষ্যে, একটি দক্ষতা উন্নয়ন মূলক তিন বছর মেয়াদী প্রকল্প, যা সুইসকন্টাক্ট বর্তমানে সিলেট এবং ঢাকা বিভাগে বাস্তবায়ন করছে। উত্তরণ প্রকল্পের বাকি দুটি লক্ষ্য হলো, ২০০০ যুবাকে প্রশিক্ষণ প্রদান এবং সিলেট সিটি কর্পোরেশন সাথে পার্টনারশিপের মাধ্যমে একটি আধুনিক ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করা, যা প্রকল্প পরবর্তী কালে সিলেট সিটি কপোরেশন পরিচালনা করবে। এছাড়াও, বাংলাদেশে প্যাকেজিং শিল্পের চাহিদা পূরণের জন্য উত্তরণ প্রকল্প ইতোমধ্যে একটি নতুন ট্রেড, ”প্যাকেজিং এবং ফিনিশিং অপারেশন” চালু করেছে, যা জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ক কর্তৃক যাচাই হবার পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অনুমোদনের প্রক্রিয়াাধীন রয়েছে।