ক্রেডিট কার্ডের সুদহার কমেছে অধিকাংশ ব্যাংকের। বর্তমানে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে নেয়া ঋণের সুদহার ৯ থেকে ২৭ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। গত এক বছর আগেও এই কার্ডের সুদহার ১৫ থেকে ৩৮ শতাংশের মধ্যে ছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ব্যাংকগুলো তাদের ইচ্ছেমতো দীর্ঘদিন ধরে ক্রেডিট কার্ডে সুদ নিয়ে আসছে।
অন্য ঋণের তুলনায় ক্রেডিট কার্ডে নেওয়া ঋণের সুদ দ্বিগুণের বেশি নিচ্ছে বেশিরভাগ ব্যাংক, এ রকম অভিযোগ করে আসছে গ্রাহকরা। ফলে ২০১৭ সালে একটি নীতিমালা করে, তাতেও সুফল পায়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অবশেষে ব্যাংকগুলো তাদের ক্রেডিট কার্ডের সুদহার উল্লেখযোগ্যহারে কমিয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী, ভোক্তা ঋণের সর্বোচ্চ যে সুদ হার রয়েছে, তার চেয়ে ক্রেডিট কার্ডে ৫ শতাংশ বেশি সুদ নিতে পারবে। অর্থাৎ গাড়ি, ফ্লাট, টিভি-ফ্রিজ কেনা, বিয়ে বা যে কোনো ব্যক্তিগত ঋণে যদি কোনো ব্যাংকের সর্বোচ্চ ১৩ শতাংশ সুদ নির্ধারিত থাকে, ওই ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডে সর্বোচ্চ ১৮ শতাংশ সুদ নিতে পারবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত এক বছরের ব্যবধানে সরকারি-বেসরকারিসহ সব ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সুদহার কমে এসেছে। যেমন সোনালী ও জনতা ব্যাংকে এক বছর আগে ক্রেডিট কার্ডে ঋণের সুদহার ছিল ১৪ ও ২৪ শতাংশ। কিন্তু বর্তমানে ব্যাংক দুটিতে এই সুদহার ৯ শতাংশ। আবার বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে এবি ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক ও সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সুদহার ছিল যথাক্রমে ২০, ২৪, ২৫ ও ২৭ শতাংশ। বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে একই ঋণের সুদহার ১৭.৫, ১১.৫, ১২ ও ২০.৫ শতাংশ।
তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে এখন ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৮ লাখের বেশি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, অগ্রণী, বেসিক, বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট, আল-আরাফাহ ইসলামী, বাংলাদেশ কমার্স, ডাচ্-বাংলা, যমুনা, প্রাইম, সোশ্যাল ইসলামী, সাউথ ইস্ট, ইউনিয়ন ও উত্তরা ব্যাংকের বর্তমান সুদহার ৯ শতাংশ। যা গত বছর ছিল ২০ শতাংশের উপরে। এনসিসি ও ট্রাস্ট ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডে সুদ নিচ্ছে ৯.৫ শতাংশ।
এ ছাড়া রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ১১ শতাংশ, এবি ব্যাংক ১৭.৫ শতাংশ, ব্যাংক এশিয়া ১২ শতাংশ, ঢাকা ব্যাংক ১২.৫ শতাংশ, ব্র্যাক ব্যাংক ২৭ শতাংশ, ইস্টার্ন ব্যাংক ১০ শতাংশ, এক্সিম ব্যাংক ১৬ শতাংশ, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক ১৪ শতাংশ, মিডল্যান্ড ব্যাংক ১৩ শতাংশ, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ১০.৫ শতাংশ, মেঘনা ব্যাংক ২৫ শতাংশ, মধুমতি ব্যাংক ১২.৫ শতাংশ, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ২৬.৫ শতাংশ, এনআরবি ব্যাংক ১২ শতাংশ, এনআরবি কমার্শিয়াল ও ওয়ান ব্যাংক ২৪ শতাংশ, পদ্মা ব্যাংক ১৪ শতাংশ, পূবালী ব্যাংক ১৭ শতাংশ, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক ১২ শতাংশ, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ১১ শতাংশ, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ২৫ শতাংশ, দি সিটি ব্যাংক ২০.৫ শতাংশ, ইউসিবি ১১.৫ শতাংশ, কমার্শিয়াল ব্যাংক অফ সিলন ১৫ শতাংশ, এইএসবিসি ব্যাংক ১৬ শতাংশ, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ১৬.৫ শতাংশ, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ১২.৫ শতাংশ এবং উরি ব্যাংক ১০.৫ শতাংশ সুদ নিচ্ছে।