শুক্রবার, ৮ই নভেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

UCB Bank

ভারত থেকে বাংলাদেশে গম রপ্তানিতে বাধা নেই

প্রকাশঃ

গম রপ্তানিতে ভারত যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেটি প্রতিবেশী দেশগুলোর উপর প্রযোজ্য নয়। তাই প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশে ভারতের গম রপ্তানিতে বাধা নেই। ফলে এ নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগের কারণ নেই বলে জানিয়েছে দেশটি।

রোববার (১৫ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাস জানিয়েছে, সম্প্রতি ভারত থেকে গম রপ্তানিতে দেওয়া নয়াদিল্লির নিষেধাজ্ঞা প্রতিবেশীদের জন্য নয়। ইতোমধ্যে গম ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত যে চুক্তিগুলো হয়েছে, সেটিও এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে রয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভারতে গম রপ্তানির ওপর ‘নিষেধাজ্ঞা’র খবর প্রকাশিত হয়েছে। অভ্যন্তরীণ খাদ্যের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা, খাদ্যমূল্যের সঙ্গে সম্পর্কিত মূল্যস্ফীতি কমানো এবং ভারতের প্রতিবেশী ও খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকিতে থাকা অন্য দেশগুলোর চাহিদা পূরণে সহায়তার জন্য এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ভারতীয় হাইকমিশনের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ভারতে গম রপ্তানির ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ এরই মধ্যে চুক্তিবদ্ধ চালানের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না। এই নির্দেশাবলী ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোতেও গম রপ্তানি আটকাবে না।

পাশাপাশি, অন্য যেসব দেশ অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে ভারতীয় গম আমদানি করতে ইচ্ছুক, সেসব দেশের সরকারের অনুরোধ সাপেক্ষেও গম রপ্তানি চলবে।

এর আগে, দেশীয় বাজারে দাম কমানোর লক্ষ্যে গত শুক্রবার গম রপ্তানি নিষিদ্ধ করে ভারত। দেশটির ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেডের (ডিজিএফটি) জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারত সরকার দেশের সামগ্রিক খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং প্রতিবেশী ও অন্যান্য অরক্ষিত দেশগুলোর চাহিদাকে সমর্থনের জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, যেসব রপ্তানি চালানের ঋণপত্র (এলসি) বিজ্ঞপ্তির আগেই ইস্যু করা হয়েছে, সেগুলো যেতে পারবে। এছাড়া সরকারি অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে অন্য দেশেও গম রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হবে। শুক্রবার ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই কার্যকর হয় এ নিষেধাজ্ঞা।

পরিমাণ ও মূল্য উভয় দিক থেকে ভারতীয় গমের সবচেয়ে বড় ক্রেতা বাংলাদেশ। ২০২০-২১ অর্থবছরে ভারতের মোট গম রপ্তানির ৫৪ শতাংশই এসেছে বাংলাদেশে। ওই বছর ভারতীয় গমের শীর্ষ ১০ ক্রেতা ছিল বাংলাদেশ, নেপাল, সংযুক্ত আরব আমিরাত, শ্রীলঙ্কা, ইয়েমেন, আফগানিস্তান, কাতার, ইন্দোনেশিয়া, ওমান ও মালয়েশিয়া।

বিশ্বের মোট গম রপ্তানির ২৯ শতাংশই সরবরাহ করে রাশিয়া ও ইউক্রেন। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দুই দেশের মধ্যে সংঘাত শুরুর পর থেকে আন্তর্জাতিক ভোগ্যপণ্যের বাজারে রীতিমতো আগুন লেগেছে। হু হু করে দাম বেড়েছে গমেরও।

যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের রপ্তানি বন্ধ আর রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বব্যাপী ভারতীয় গমের চাহিদা বেড়েছে। ভারতের গম রপ্তানিকারকরা জানিয়েছেন, রাশিয়া-ইউক্রেনের বিকল্প হিসেবে অনেক ক্রেতাই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।

এ অবস্থায় বৈশ্বিক চাহিদা ও মূল্যের ঊর্ধ্বগতি বিবেচনায় এ বছর রেকর্ড পরিমাণ গম রপ্তানির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল ভারত। সপ্তাহখানেক আগেই দেশটি জানিয়েছিল, গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। তবে স্থানীয় বাজারে মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে শেষপর্যন্ত সেই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হলো দেশটি।

শেয়ার করুনঃ

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এই মাত্র প্রকাশিত

এই বিভাগের আরও সংবাদ