দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে মালয়েশিয়া পর্যটনের জন্য অন্যতম সেরা দেশ। করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ ২ বছর দেশটির সব পর্যটন স্পট সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ছিল। এই পর্যটন শিল্প থেকে মোটা অংকের আয় জিডিপিতে বড় ভূমিকা রাখে। বিদেশি ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এই খাতে মোটা অংকের বিনিয়োগ করে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।
এখন পর্যন্ত পর্যটন ভিসা সহ স্পটগুলো বন্ধ থাকলেও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ডিসেম্বরে সবকিছু খুলে দেয়া হবে। এর আগে ৯০ শতাংশ টিকা প্রদান করেই খুলবে পর্যটনের দুয়ার। প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব সমপ্রতি এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন। ইতিমধ্যেই পর্যটন স্পটগুলোতে চলছে সংস্কারের কাজ। মালয়েশিয়া আন্দামান সাগরে ১০৪টি দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে গঠিত লংকাউই দ্বীপমালা স্থানীয় পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে।
দেশটির উপকূলীয় এলাকা থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি এই দ্বীপমালা সারা বিশ্বের ট্যুরিস্টদের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। এদিকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়েছে। ধস নেমেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিতে। চাকরি হারিয়ে বেকার হয়েছে লাখ লাখ মানুষ। ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়েছে পর্যটন শিল্পসহ সবধরনের ব্যবসা বাণিজ্য। গত দুই বছরে মালয়েশিয়ায় পর্যটক একেবারে তলানিতে নেমেছে। ফলে দেশটির পর্যটন শিল্পে চূড়ান্ত ধস নেমে এসেছে। এমন তথ্য জানিয়েছে মালয়েশিয়া ট্যুরিজম প্রোমোশন বোর্ড।
মালয়েশিয়া ট্যুরিজম প্রোমোশন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, করোনা মহামারির কারণে গত বছরের জানুয়ারি থেকে মালয়েশিয়ায় পর্যটকের সংখ্যা ৭৮ দশমিক ৬ শতাংশ কমে গেছে। ২০১৯ সালে যেখানে পর্যটকের সংখ্যা ছিল ২ কোটির বেশি।
আরও পড়ুন : করোনায় সাড়ে চার মাসে ৩০ কোটি টাকার ক্ষতি পার্বত্য পর্যটন খাতে
মালয়েশিয়া ট্যুরিজম প্রোমোশন বোর্ড বলছে, মহামারির কারণে পর্যটন খাতে আয় কমেছে প্রায় ৮১ শতাংশ। ২০১৯ সালে পর্যটন খাতে আয় ছিল ৬৬ দশমিক ১ বিলিয়ন রিঙ্গিত। ২০১৯ সালে পর্যটন খাত থেকে আয় হয়েছিল ২৪ হাজার ২ কোটি রিঙ্গিত, যা দেশটির জিডিপি’র ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ। কিন্তু করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে গত বছরের মার্চে শুরু হওয়া লকডাউনে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো মালয়েশিয়ার পর্যটন খাতেও মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
পাশাপাশি দেশটির অর্থনীতি তলানিতে পৌঁছে। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য সরকার বিভিন্ন ধাপে ধাপে নানামুখী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। আশা করা যাচ্ছে সরকারের এসব বাস্তবমুখী পরিকল্পনায় আগামী বছরের শুরু থেকে এশিয়ার ইউরোপ খ্যাত এই মালয়েশিয়া তার চিরচেনা রূপ ফিরে পাবে। চলতি মাস থেকে করোনার প্রকোপ উল্লেখযোগ্য হারে কমছে। সরকারও সর্বসাধারণকে ভ্যাকসিন গণহারে প্রদান করে ইতিমধ্যে ৮৭ ভাগ সম্পন্ন করে ফেলেছে।