এতদিন ধরে প্রসূতি নারী শ্রমিকদের ছুটি ছিল ১৬ সপ্তাহ বা ১১২ দিন। এই ছুটি সন্তান প্রসবের আগে ও পরে আট সপ্তাহ করে নিতে হতো। এখন থেকে মোট ছুটি হবে ১২০ দিন এবং শ্রমিকরা তার সুবিধা অনুযায়ী সন্তান প্রসবের আগে অথবা পরে পুরো ছুটি একসাথে ভোগ করতে পারবেন।
শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি বৃদ্ধিসহ একাধিক পরিবর্তন করে নতুন শ্রম আইনের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার (৯ অক্টোবর) মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন করে বাংলাদেশ শ্রম আইন (সংশোধন) ২০২৩ প্রণয়ন করা হয়েছে।
শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করা এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলওর আইনের সাথে সামঞ্জস্য বজায় রাখার জন্য এই পরিবর্তন করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, এতদিন ধরে প্রসূতি নারী শ্রমিকদের ছুটি ছিল ১৬ সপ্তাহ বা ১১২ দিন। এই ছুটি সন্তান প্রসবের আগে ও পরে আট সপ্তাহ করে নিতে হতো। এখন থেকে মোট ছুটি হবে ১২০ দিন এবং শ্রমিকরা তার সুবিধা অনুযায়ী সন্তান প্রসবের আগে অথবা পরে পুরো ছুটি একসাথে ভোগ করতে পারবেন।
এছাড়া ট্রেড ইউনিয়ন করার ক্ষেত্রেও বড় পরিবর্তন এনেছে সরকার। এখন থেকে যেসব কারখানায় তিন হাজারের বেশি শ্রমিক রয়েছে সেখানে ১৫% শ্রমিক স্বাক্ষর করে এবং সম্মতি দিয়ে ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করতে পারবে। তবে যেসব প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকের সংখ্যা ৩,০০০ পর্যন্ত সেখানে আগের মত কমপক্ষে ২০% শ্রমিককে জোটবদ্ধ হয়ে ট্রেড ইউনিয়ন করতে হবে। তবে গ্রুপ অব কোম্পানির ক্ষেত্রে ২০% শ্রমিক জোটবদ্ধ হলে ট্রেড ইউনিয়ন করতে পারবে, যা শ্রম আইন- ২০০৬ এ ছিল ৩০%।
শ্রমিকদের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য নতুন আইনে নতুন একটি ধারা যোগ করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সচিব। তিনি বলেন দেশে ১৩ টি শ্রম আদালত আছে। জেলা জজ পর্যায়ের বিচারকরা এসব আদালতে বিচার করেন।
শ্রম আদালতের রায়ে কোনো পক্ষ ক্ষুব্ধ হলে তারা শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করতে পারেন। এই ট্রাইব্যুনালের বিচারকের দায়িত্বে থাকেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক। অনেক সময় দেখা যায় এই ট্রাইব্যুনালের রায়ও কোনো পক্ষ মানতে চাচ্ছে না। তারা হাইকোর্টে গিয়ে আপিল করেন, এতে বিচার কাজ শেষ হতে অনেক সময় লেগে যায়। এজন্য এখন থেকে ট্রাইব্যুনালের রায়ে যদি কোন পক্ষ সন্তুষ্ট না হন তাকে হাইকোর্টের আপিল বিভাগে গিয়ে আপিল করতে হবে।
জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে শ্রমিকদের সাথে কোন ধরনের বৈষম্য করা যাবে না বলে নতুন আইনে উল্লেখ করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরো জানান, গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ সম্পর্কিত আইন প্রণয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন।