শুক্রবার, ১৫ই নভেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

UCB Bank

মালদ্বীপে নতুন অবকাঠামো বিনির্মাণে বাংলাদেশি শ্রমিক প্রয়োজন হবেই

প্রকাশঃ

মালদ্বীপে নতুন নতুন অবকাঠামো বিনির্মাণে প্রবাসীরা ব্যাপক অবদান রেখেছেন। বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মালদ্বীপের শ্রমবাজার বর্তমানে বন্ধ থাকলেও অদূর ভবিষ্যতে শ্রমিক নিতেই হবে। অপেক্ষাকৃত কম বেতন ও কাজের প্রতি আন্তরিকতার কারণে অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের চাহিদা অনেক বেশি।

সম্প্রতি মালদ্বীপ সফরকালে দেশের বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে দূতাবাস কার্যালয়ে আলাপকালে এসব কথা বলেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ নাজমুল হাসান। তিনি বলেন, এক বা দুই বছর পরে হোক মালদ্বীপকে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতেই হবে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক আনা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয় দেশটি। করোনাকালীন এদেশে অবকাঠামো নির্মাণকাজ প্রায় বন্ধই ছিল। মহামারি কেটে গেলে দেশটির নির্মাণ শ্রমিক প্রয়োজন হবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মতো এত কম পারিশ্রমিকে আর কোনো দেশের কর্মী পাবে না। ফলে তারা বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিতে বাধ্য হবে। অদক্ষ শ্রমিক নেওয়া বন্ধ থাকলেও দক্ষ চিকিৎসক ও নার্সরা মালদ্বীপে মোটা অংকের বেতনে চাকরিতে আসছেন। এদেশে এ মুহূর্তে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত নার্সের চাহিদা অনেক বেশি। হাইকমিশনার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শিগগির মালদ্বীপ সফরে আসছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মালদ্বীপ সরকারপ্রধানের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে বলে তিনি জানান।

জানা গেছে, প্রায় ৫ লাখ জনসংখ্যার দ্বীপবেষ্টিত দেশটিতে প্রায় এক লাখ বাংলাদেশি রয়েছে। তাদের মধ্যে ৫০ শতাংশই অবৈধ। যারা অবৈধ (অনিয়মিত) তাদের নিয়মিত করতে এদেশের সরকার একটি সুযোগ দেয়। তখন ৪০ হাজার অনিয়মিত প্রবাসী কর্মী রেজিস্ট্রেশন করেন। ওই সময় রেজিস্ট্রেশন করলে আটক করে দেশে পাঠিয়ে দিতে পারে এমন আশঙ্কায় ২০ হাজার কর্মী রেজিস্ট্রেশনই করেননি। রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলেও এখন পর্যন্ত আবেদনকারীদের কাউকে ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করেনি সরকার।

সম্প্রতি বেসরকারি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের আমন্ত্রণে ৮৫ সদস্যের গণমাধ্যমের একটি প্রতিনিধি দলের মালদ্বীপ সফরকালে দেখা গেছে রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন অফিস আদালতে অসংখ্য বাংলাদেশি কাজ করছেন। তারা হোটেল-রেস্টুরেন্ট, ভবন নির্মাণকাজ করেন। কেউ কেউ ছোটখাটো ব্যবসা করছেন। পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে কেউ কেউ খুব ভালো আয় রোজগারও করছেন।

মালদ্বীপে কেমন আছেন প্রবাসীরা

মালদ্বীপে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ভালো আছেন। অনিয়মিত বা যাদের কাজের পারমিট শেষ হয়েছে, বর্তমানে অবৈধ ছাড়া অধিকাংশ বাংলাদেশি শ্রমিক ভালো বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। অনেকেই প্রতি মাসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা দেশে পাঠাচ্ছেন।

ফেনী প্রবাসী মধ্যবয়সী আবদুল সালাম। ১৭ বছর ধরে মালদ্বীপে লোহার গ্রিল তৈরির কাজ করেন। এখানে আসার পর সব মিলিয়ে তিনবার দেশে ফেরেন। তিনি জানান, এদেশে যানজট ও ধুলোবালি কিছুই নেই। ফলে দেশে ফিরতে সহজে মন চায় না।

তবে ওয়ার্ক পারমিট হারিয়ে যারা এখন অবৈধভাবে বসবাস করছেন তারা বিপাকে রয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, যারা অবৈধভাবে বসবাস করছেন তাদের নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান কম বেতন দেন। এনিয়ে হাইকমিশনে অভিযোগ করলেও সেখান থেকে কোনো ধরনের সাহায্য পাওয়া যায় না। এ অভিযোগ সম্পর্কে হাইকমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, যারা অবৈধভাবে রয়েছেন তারা ভাবেন হাইকমিশনে এলেই সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু বাস্তবে সুনির্দিষ্ট একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হাইকমিশন থেকে মালদ্বীপ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে চিঠি লেখা হয়।

তিনি বলেন, অনেক সময় দেখা গেছে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে অভিযোগকারী বাংলাদেশিরা তার প্রতিষ্ঠানের নয় বলে তা এড়িয়ে যায়। এ সময় কাগজপত্র বা ওয়ার্কপারমিট না থাকায় তাদের আর কিছু বলা থাকে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।

শেয়ার করুনঃ

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এই মাত্র প্রকাশিত

এই বিভাগের আরও সংবাদ