মূল্যবৃদ্ধির অস্থিরতায় ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। প্রতিনিয়তই বাড়ছে ডলারের দাম । অস্বাভাবিক আমদানি ব্যয়ের চাপে বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আর খোলা বাজারে যোগান ও চাহিদায় বড় ধরনের অসামঞ্জস্য তৈরি হয়েছে। ফলে খোলাবাজারেও প্রতি ডলার কিনতে হচ্ছে প্রায় ৯২ থেকে ৯৩ টাকা দিয়ে। এতে বিপাকে পড়ছেন বিদেশগামী যাত্রীরা।
সর্বশেষ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য দাঁড়ায় ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে এ হার ব্যাংকভেদে ৮৫ টাকা ৫০ পয়সায় কেনা ও বিক্রি ৮৬ টাকা ৫০ পয়সা। তবে খোলা বাজার ও নগদ মূল্যে ডলার ৯১ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ৯৩ টাকা পর্যন্ত কেনাবেচা হচ্ছে।
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘ সময় মানুষ দেশের বাইরে যাননি। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় অনেক মানুষ চিকিৎসার প্রয়োজনে বিদেশ যাচ্ছেন। অনেকেই আবার দেশের বাইরে ঘুরতেও যাচ্ছেন। এসব কারণে ডলারের চাহিদা বেড়েছে অনেক। চাহিদার অনুপাতে সরবরাহ কম থাকায় দামও বেড়ে গেছে। তবে খোলা বাজারে সবচেয়ে বেশি বাড়ে রমজান মাসে। অনেকে ওমরাহ করতে গিয়েছিলেন আর সেই সুযোগ নিয়েছিলেন খোলা বাজারের বিক্রেতারা।
ব্যাংকখাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকেই পর্যটনখাত চাঙ্গা হতে শুরু করেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সীমান্ত খুলেছে। মানুষের পেশাগত কাজ, শিক্ষা, চিকিৎসা ও কেনাকাটার জন্য বিভিন্ন দেশে যাতায়াত করছেন। এর প্রভাব পড়ছে দেশের খোলা বাজারের ডলারের দামে।
আর এক্সচেঞ্জ হাউস ও খোলা বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, মানুষ এখন ডলার বিক্রি করতে আসছেন না। যারা আসছেন তারা শুধু কেনার জন্যই। এই কারণে বাড়ছে ডলারের দাম ।
মতিঝিল ইউনুস সেন্টার এলাকায় খোলা বাজারের ডলার কিনতে এসেছেন অনেকে। এর মধ্যে আসাদ নামে একজন বলেন, আমি ব্যাঙ্গালুরে চিকিৎসার যাবো। এখানে ডলার প্রতি ৯২ টাকা ৭০ পয়সা ধরেছে। সবাই বলছে ডলার নেই, একই দাম। আমার জরুরি প্রয়োজনে বাধ্য হয়েই কিনতে হলো।
ব্যাংকে ডলার কিনতে গেলে নানা ডকুমেন্টের প্রয়োজন পড়ে। সেখানে (ব্যাংক) কম রেটে পাওয়া যাচ্ছে কিন্তু সব কাগজ সঙ্গে আনা হয়নি তাই খোলা বাজারই আমার ভরসা। দাম বেশি হলেও নিতে হলো এখান থেকে।
রিপন হাসান নামে খোলা বাজারের এক ডলার বিক্রেতা জানান, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকেই ডলারের ক্রেতা বেড়েছে, বিক্রেতা বাড়েনি। এখন সবাই ডলার কিনতে আসছেন, বিক্রি করতে আসছেন না। স্বাভাবিকভাবেই ক্রেতা বেশি হলে সংকট হয়, তাই দামও বেড়েছে কিছুটা।
