সরকারি স্কুলে ৯৮ হাজার নির্বাচিত, বেসরকারিতে ২ লাখ ৭ হাজারদেশের সব সরকারি স্কুল এবং মহানগর ও জেলা সদরের বেসরকারি স্কুলে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য ৩ লাখ ৬ হাজার ৮৮ জন শিক্ষার্থী লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছেন।
৬৮০টি সরকারি স্কুলে ১ লাখ ৮ হাজার ৭১৬টি আসনের বিপরীতে ৯৮ হাজার ২০৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছে।
অন্যদিকে মহানগর ও জেলা সদরের ৪ হাজার ৯৪৫টি বেসরকারি বিদ্যালয়ে ১০ লাখ ৭ হাজার ৬৭৩টি আসনের বিপরীতে ২ লাখ ৭ হাজার ৮৮৩ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তির লটারি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। পরে ডিজিটাল লটারির দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে দুপুরে ফল প্রকাশিত হয়।
শিক্ষার্থীরা আবেদনের সময় যে মোবাইল নম্বর ব্যবহার করেছে, সেটিতে এসএমএসের মাধ্যমে ফল পৌঁছাবে। ফল মিলছে ভর্তির ওয়েবসাইটেও।
লটারি প্রক্রিয়া শেষে ঢাকা মহানগর ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন বলেন, “সরকারি স্কুলে ভর্তির জন্য ৯৮ হাজার ২০৫ জন ও বেসরকারি স্কুলে ভর্তির জন্য ২ লাখ ৭ হাজার ৮৮৩ জন শিক্ষার্থী লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছেন।
“একই সঙ্গে লটারির মাধ্যমে প্রথম ও দ্বিতীয় অপেক্ষা তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। সবাই ফল পেয়ে যাবেন।”
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক আজিজ বলেন, “সরকারি স্কুলে ভর্তির প্রথম ওয়েটিং লিস্টে ৭৯ হাজার ৫০২ জন ও বেসরকারি স্কুলে ১ লাখ ১ হাজার ১৫৬ জন রয়েছেন।
“আর দ্বিতীয় ওয়েটিং লিস্টে সরকারি স্কুলে ৫৮ হাজার ৫৫৮ জন ও বেসরকারি স্কুলে ৬৭ হাজার ৫১৪ জন রয়েছেন।”
ভর্তি শুরু বুধবার
নির্বাচিতরা বুধবার থেকে ভর্তির সুযোগ পাবে। আগামী ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচিতদের ভর্তির সুযোগ থাকবে বলে জানান উপপরিচালক আজিজ।
তিনি বলেন, এরপর তিন দিন প্রথম অপেক্ষমান তালিকা থেকে এবং পরের দুই দিন দ্বিতীয় অপেক্ষমান তালিকা থেকে শূন্য থাকা আসনে ভর্তির সুযোগ পাবে।
যেভাবে মিলছে ফল
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছে, শিক্ষার্থীরা যে মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে ভর্তির আবেদন করেছে, লটারি কার্যক্রম শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের ওই মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে ফল পাঠানো হয়েছে।
তাছাড়া ওয়েবসাইটে (https://gsa.teletalk.com.bd/) প্রবেশ করে অভিভাবকরা তাদের লগইন আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে লটারির ফল ডাউনলোড ও প্রিন্ট দিতে পারবেন। ওই ওয়েবসাইটে আইডি পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে প্রধান শিক্ষকরাও নিজ নিজ স্কুলের লটারির ফল ডাউনলোড ও প্রিন্ট করতে পারবেন।
যে কারণে সব আসনে শিক্ষার্থী নির্বাচিত হয়নি
গত ১২ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত অনলাইনে স্কুলে ভর্তির আবেদন করার সুযোগ পেয়েছিল শিক্ষার্থীরা। ১৮ দিনে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট ৯ লাখ ৮৩ হাজার ৫৩৯ জন শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন করে।
এর মধ্যে ৬৮০টি সরকারি স্কুলে ১ লাখ ৮ হাজার ৭১৬টি আসনের বিপরীতে আবেদন করে ৬ লাখ ৩৫ হাজার ৭২ জন। নির্বাচিত হয়েছে ৯৮ হাজার ২০৫ জন।
অন্যদিকে মহানগর ও জেলা সদরের ৪ হাজার ৯৪৫টি বেসরকারি বিদ্যালয়ে ১০ লাখ ৭ হাজার ৬৭৩টি শূন্য আসনের বিপরীতে আবেদন করে ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৪৬৭ জন শিক্ষার্থী। নির্বাচিত হয়েছে ২ লাখ ৭ হাজার ৮৮৩ জন।
সব আসনে শিক্ষার্থী নির্বাচিত না হওয়ার ব্যাখ্যায় ঢাকা মহানগর ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন বলেন, “অনেক সরকারি-বেসরকারি স্কুলের সব আসনে শিক্ষার্থীরা আবেদন করেনি। সরকারি স্কুলে বিপুল পরিমাণে শিক্ষার্থীরা আবেদন করলেও উপজেলা পর্যায়ের জাতীয়করণ হওয়া স্কুলে আবেদন কম ছিল। হাতিয়ার একটি সরকারি স্কুলে ১০৫টি আসনের বিপরীতে ৪৩ জন আবেদন করেছন।
“একইভাবে জেলা পর্যায়ের বেসরকারি স্কুলগুলোর সব শূন্য আসনে আবেদন পড়েনি। আবেদনের প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত করা হয়েছে। তাই কিছু আসন শূন্য রয়ে গেছে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক মোজাক্কার হোসেন চৌধুরী।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলাম, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব খ ম কবিরুল ইসলাম, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল মাবুদ চৌধুরী ভর্তি লটারি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।