শুক্রবার, ১৪ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১লা ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

UCB Bank

সুদহার পরিবর্তন ছাড়াই নতুন মুদ্রানীতি

প্রকাশঃ

বেসরকারি খাতের ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ। আগের মুদ্রানীতিতেও লক্ষ্যমাত্রা একই ছিল।

এক বছরের বেশি সময় ধরে চড়ে থাকা মূল্যস্ফীতির চাপ নিয়ে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর প্রথম যে মুদ্রানীতির ঘোষণা করলেন, তাতে নীতি সুদহারে কোনো পরিবর্তন আসেনি।

২০২৫ সালের জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত মুদ্রানীতিতে রেপো হার ১০ শতাংশই রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে গত এক বছর ধরে সুদের হার টানা বাড়িয়ে আসছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেই ধারা থেকে বের হওয়ার চ্যালেঞ্জ নিয়ে সোমবার নিজের ‘আমলের’ প্রথম মুদ্রানীতি ঘোষণা দেন আহসান এইচ মনসুর। মুদ্রানীতি পড়ে শোনান বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর হাবিবুর রহমান।

নতুন মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ। আগের মুদ্রানীতিতেও লক্ষ্যমাত্রা একই ছিল। অবশ্য গত বছরের জুন পর্যন্ত তা ছিল ১০ শতাংশ।

সরকারি খাতে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৭ দশমিক ৫০ শতাংশ, যা আগের মুদ্রানীতিতে ছিল ১৪ দশমিক ২ শতাংশ। আর গত বছরের জুন শেষে ছিল ১২ দশমিক ৮ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশা করছে, নতুন মুদ্রানীতি কার্যকর করা গেলে মূল্যস্ফীতি ৭ থেকে ৮ শতাংশের মধ্যে আটকে রাখা যাবে। আগের মুদ্রানীতিতেও মূল্যস্ফীতির ৬ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্য ধরা হয়েছিল, যদিও জানুয়ারিতে এই হার ছিল ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ।

গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, নীতি সুদহার আগের মতই অপরিবর্তিত থাকবে। যতদিন মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশের নীচে না নেমে আসে, ততদিন নীতি সুদহার কমানো হবে না।

“মূল্যস্ফীতি নিয়ে সবার মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এ নিয়ে কাজ করছে।”

রেপোর মাধ্যমে ব্যাংকগুলো এক দিনের জন্য টাকা ধার নেয়। একে বলা হয় ব্যাংকিং খাতের নীতি উপাদান (পলিসি টুলস)। এর সুদ হারকে বলা হয় নীতি সুদ হার (পলিসি রেট)। এর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে তারল্য ও বিনিয়োগ নিয়ন্ত্রণ করে।

রেপোর সুদ বাড়লে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোর তহবিল পাওয়ার খরচ আরও বাড়ে। তাতে ব্যাংক থেকে ব্যবসায়ীদের ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রেও সুদহার বেড়ে যায়।

নতুন মুদ্রানীতিতে স্ট্যান্ডিং ল্যান্ডিং ফ্যাসিলিটি (এসএলএফ) ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ ও স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ রাখা হয়েছে।

গভর্নর বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক যে নীতি গ্রহণ করেছে; সেসব পদ্ধতি অর্থনীতিতে কাজ করছে; সব কিছুতেই সময় লাগে। সেই সময় দিতে হবে। কোনো নীতি নিলে ১২ থেকে ১৮ মাস লাগে সেটা কার্যকর হতে।”

তিনি বলেন, “জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি সামান্য কমেছে। সামনে মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে, তার মানে এই নয় যে সব কিছু ডাউন হয়ে গেল।

“চলতি বছর জুন নাগাদ আমরা আশা করছি মূল্যস্ফীতি ৭ থেকে ৮ শতাংশে নেমে আসবে।”

তিনি বলেন, ব্যাংকে পরিচালকের সংখ্যা কমিয়ে আনা হবে। এছাড়া বন্ধু ও আত্মীয়স্বজনকে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।

গভর্নর বলেন, “বিনিময় হারকে স্থিতিশীলতায় আনতে পেরেছি। এটা অন্যতম একটা লক্ষ্য ছিল। তবে আমি এই বলছি না যে, সেটা একই দরে থাকবে।”

শেয়ার করুনঃ

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এই মাত্র প্রকাশিত

এই বিভাগের আরও সংবাদ