নেপালে ৭২ আরোহী নিয়ে একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে। আরোহীদের মধ্যে ৬৮ যাত্রী ও ৪ জন ক্রু ছিলেন। রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে পোখরার উদ্দেশে যাওয়ার সময় উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪০ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। নিহতদের নাম পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
আজ রোববার (১৫ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে নেপালি সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট।
দুর্ঘটনাকবলিত উড়োজাহাজটি ইয়েতি এয়ারলাইন্সের বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
নেপাল বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র জগন্নাথ নিরুলা বলেছেন, ‘উদ্ধার অভিযান চলছে। (দুর্ঘটনার সময়) আবহাওয়া পরিষ্কার ছিল।’
ইয়েতি এয়ারলাইন্সের মুখপাত্র সুদর্শন বারতৌলা জানিয়েছেন, তাদের পরিচালিত টুইন-ইঞ্জিন এটিআর ৭২ মডেলের এই উড়োজাহাজটিতে ৭২ জন আরোহী ছিল। আরোহীদের মধ্যে দুটি শিশু, ৪ জন ক্রু সদস্য এবং ১০ জন বিদেশি নাগরিক।
এদিকে দুর্ঘটনার পর শতাধিক উদ্ধারকর্মী পাহাড়ের ধারে ওই দুর্ঘটনাস্থল হাজির হন। ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার টোয়েন্টিফোরের তথ্য অনুযায়ী, দুর্ঘটনাকবলিত উড়োজাহাজটির বয়স ১৫ বছর।
বিশ্বব্যাপী বহুল ব্যবহৃত টুইন ইঞ্জিন টার্বোপ্রপ প্লেন এটিআর ৭২ হচ্ছে এয়ারবাস এবং ইতালির লিওনার্দোর যৌথ উদ্যোগে নির্মিত। ইয়েতি এয়ারলাইন্সের ওয়েবসাইট অনুসারে, সংস্থাটির বহরে ছয়টি এটিআর৭২-৫০০ মডেলের উড়োজাহাজ রয়েছে।
রয়টার্স বলছে, নেপালে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা অস্বাভাবিক নয়। কারণ এভারেস্টসহ বিশ্বের ১৪টি সর্বোচ্চ পর্বতের মধ্যে আটটির অবস্থান এই দেশটিতে এবং এই কারণে আবহাওয়া হঠাৎ পরিবর্তন হতে পারে এবং বিমান চলাচলের জন্য বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার পর মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকেছেন বলে নেপালের সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, দুর্ঘটনাকবলিত উড়োজাহাজটিতে অন্যান্য যাত্রীদের মধ্যে ৫ জন ভারতীয়, ৪ জন রাশিয়ান, ১ জন আইরিশ এবং ২ জন দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক ছিলেন।
উল্লেখ্য, দুর্গম পর্বত, বৈরী আবহাওয়া, প্রশিক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবসহ নানা কারণে দক্ষিণ এশিয়ার পার্বত্য দেশ নেপালে প্রায়শই উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। গত বছরের মে মাসে নেপালের উত্তরাঞ্চলের মুসতাং জেলায় উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় ২১ যাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল।