রবিবার, ১৭ই নভেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২রা অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

UCB Bank

রোজায় ইফতারে ভাজাপোড়া যদি খেতেই চান তাহলে করণীয়

প্রকাশঃ

রোজায় ইফতারে বেগুনি, পিঁয়াজু, ছোলা, চপ, জিলাপি, বুন্দিয়ার মতো ভাজাপোড়াজাতীয় খাবার বেশি খাওয়া হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এমন খাবার না খাওয়ারই পক্ষে। তাহলে উপায়? জানালেন সেরা রাঁধুনি ১৪২৭ প্রতিযোগিতার প্রথম রানার-আপ রন্ধনশিল্পী নাদিয়া নাতাশা।

রোজার মাসে বড় বড় হোটেল, রেস্টুরেন্ট তো বটেই; এমনকি পাড়া-মহল্লার অলিগলিতেও বসে যায় ইফতারি আইটেমের দোকান। ছোলা, বড়া, চপ, পিঁয়াজু, জিলাপি, বুন্দিয়া, বেগুনি, ডাল মাখনি, হালিম থেকে শুরু করে নানা রকম মুখরোচক ইফতারি আইটেমের পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। বেচাবিক্রিও হয় দেদার। আবার ঘরে ঘরে গৃহিণীরাও তৈরি করেন এমন সব খাবার।

রোজায় ইফতারে তেলে ভাজা এসব খাবার খেতে সুস্বাদু ও মুখরোচক হলেও আদতে তা খাওয়া উচিত নয়। বিশেষ করে সারা দিন রোজা রাখার পর খালি পেটে এমন ভাজাপোড়া বিপত্তি বাধাতে পারে। যদি খেতেই চান তবে কিছু বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখা জরুরী।

ভালো ব্র্যান্ডের তেল ব্যবহার

ভাজাপোড়ার মতো খাবার তৈরির জন্য বাজারের নিম্নমানের কিংবা খোলা তেল ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এমন তেলে ভেজাল থাকার আশঙ্কা প্রবল। এর পরিবর্তে ভালো ব্র্যান্ডের তেল ব্যবহার করে ভাজাপোড়া খাবার তৈরি করতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে। সামান্য অলিভ অয়েলে এসব আইটেম ভেজে নিতে হবে।

একই তেল দুইবারের বেশি নয়

চপ, বেগুনি, পিঁয়াজু, জিলাপির মতো খাবার তৈরির সময় তেলে ভাজতেই হয়। এসব খাবার ভাজার সময় একই তেল বারবার ব্যবহার করে অনেকেই। এটা করা যাবে না। তেলে ভাজা খাবার এমনিতেই ক্ষতিকর। তার ওপর যদি একই তেল বারবার ব্যবহার করা হয় তখন আরো বেশি ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ জন্য ভাজাপোড়া খাবার তৈরির সময় একই তেল সর্বোচ্চ দুইবারের বেশি ব্যবহার করা যাবে না।

ডুবো তেলে ভাজা নয়

যেসব আইটেম ডুবো ভাজা ছাড়াও কম তেলে ভাজা যায় সেগুলো ডুবো তেলে ভাজা যাবে না। যেমন—পিঁয়াজু, চপ, পাকোরা। এগুলো ডুবো তেলে না ভেজে কম তেলে এপাশ-ওপাশ করে শ্যালো ফ্রাই করে নিতে হবে। প্রথমে কড়াইয়ে সামান্য তেল ছড়িয়ে দিতে হবে। এরপর এই তেলেই পিঁয়াজু, চপ শ্যালো ফ্রাই করে নিতে হবে। এতে একটু সময় বেশি ও কষ্ট হলেও খাবারগুলো নিরাপদ হবে।

এয়ার ফ্রায়ার ব্যবহার

তেল ছাড়া ভাজার আধুনিক প্রযুক্তি এয়ার ফ্রায়ার। ছোট-বড় সব ইলেকট্রনিক পণ্যের দোকানে পাওয়া যাবে এয়ার ফ্রায়ার। এই যন্ত্রে যেকোনো খাবার তেল ছাড়া ভাজা যায়। এয়ার ফ্রায়ারে তৈরি ভাজাপোড়ার সুবিধা হচ্ছে, কোনো তেল ব্যবহার হয় না। ফলে তেল খাওয়ার ক্ষতি থেকে বাঁচা যায়।

বেসনের কম ব্যবহার

ভাজাপোড়া তৈরিতে প্রচুর বেসনের ব্যবহার করা হয়। বেসন ব্যবহার না করে তাই ভাজাপোড়া তৈরিতে ডিম বা বিস্কুটের গুঁড়া ব্যবহার করতে হবে। কারণ ভাজাপোড়ায় বেসনরে চেয়ে ডিম বা বিস্কুটের গুড়া ব্যবহার বেশি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর।

প্রতিদিন সব আইটেম নয়

ভাজাপোড়ার সব আইটেম প্রতিদিন খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। ভাজাপোড়া খাওয়ার লোভ সামলাতে না পারলে একটি বা দুটি আইটেম রান্না করতে হবে। একই দিনে অনেক আইটেম রান্না করা যাবে না। যেদিন ইফতারে চপ ও পিঁয়াজু থাকবে সেদিন বেগুনি বাদ দিতে হবে। পরদিন বেগুনি রাখলে চপ বা পিঁয়াজুর যেকোনো একটি খাওয়া বাদ দিতে হবে।

প্রথমেই ভাজাপোড়া নয়

ইফতারের শুরুতেই ভাজাপোড়া খাওয়া যাবে না। প্রথমে বিশুদ্ধ পানি ও খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করতে হবে। এরপর ফলের শরবত বা জুস পান করতে হবে। এরপর ফলমূল, সালাদ, সবজি বা অন্যান্য আইটেম খেতে হবে। তারপর ভাজাপোড়া খেতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় আধাঘণ্টা বিরতি দিয়ে এসব ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া।

শেয়ার করুনঃ

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এই মাত্র প্রকাশিত

এই বিভাগের আরও সংবাদ