চিনিযুক্ত যে কোনো ধরনের পানীয় পানে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। প্রতি বছর বিশ্বে ১ কোটি ৭৯ লাখ মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
চিনিযুক্ত পানীয় অতিরিক্ত গ্রহণে হৃদরোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি বলে বলছেন, বোস্টনের টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের জিন মেয়ার ইউএসডিএ হিউম্যান নিউট্রিশন রিসার্চ সেন্টারের একদল গবেষক।
খাদ্যাভ্যাস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে শর্করা ও কোলেস্টেরলের পরিমাণ বৃদ্ধি মূলত হৃদরোগের কারণ। এ ছাড়া রক্তে লিপিডগুলোর একটি অস্বাভাবিক স্তর আছে, যাকে ডাইস্লিপিডেমিয়া বলা হয়। এটি হলো এক ধরনের বিপাকীয় ব্যাধি। চিকিৎসকরা হৃদযন্ত্রের রোগ প্রতিরোধের অংশ হিসেবে এ রোগ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন।
গবেষণায় বলা হচ্ছে, বয়স্করা যদি প্রতিদিন চিনিযুক্ত পানীয় পান করেন, তবে তাদের ডাইস্লিপিডেমিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
মিষ্টিযুক্ত পানীয় বয়স্কদের শরীরে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া উচ্চ ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন (এইচডিএল) কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয়, যা পরে ডাইস্লিপিডেমিয়া ব্যাধিতে রূপ নিতে পারে। এটি দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগকে প্রভাবিত করতে পারে।
তাদের গবেষণায় ফ্রেমিংহাম অফস্প্রিং স্টাডিতে দুটি দলের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করেছিলেন। তারা ১৯৯১-২০১৪-এর মধ্যে ৩ হাজার ১৪৬ জন অংশগ্রহণকারী এবং ২০০২-২০১১ সালের মধ্যে ৩ হাজার ৫৮৪ অংশগ্রহণকারীর ওপর গবেষণা চালান। শুরুতে গবেষকরা প্রথম দল থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করেছিলেন, যার মধ্যে ৫০ থেকে ৭০ বছর বয়সী ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তাদের শারীরিক পরীক্ষা থেকে এইচডিএল কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড স্তর বিশ্লেষণ করা হয়। ১২ বছর ধরে চলে এ কাজ।
সর্বশেষ ফলোআপ পরীক্ষায় প্রতিদিন যিনি একটি মিষ্টিযুক্ত পানীয় পান করেছিলেন, অন্যদের তুলনায় তার এইচডিএল কোলেস্টেরলের পরিমাণ ৯৮ শতাংশ বেশি ছিল। একই সঙ্গে ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ বেশি ছিল ৫৩ শতাংশ, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এমনকি হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিতে সক্ষম।