দেশে বিনিয়োগ করার জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে প্রবাসী বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে সমস্যা থাকলে তা দূর করা হবে। স্থানীয় সময় সোমবার (১ নভেম্বর) রাতে গ্লাসগোতে স্কটল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া নাগরিক সংবর্ধনায় (ভার্চুয়াল) এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
দেশে বিনিয়োগ করতে কী ধরনের সমস্যায় পড়তে হয় প্রবাসীদের কাছে তা জানতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রবাসীদের জন্য কিন্তু, বিশেষ ব্যবস্থা করা আছে। তারপরও আপনারা যখন বলছেন আপনারা যদি একটু আমাকে জানান যে, কে কে কোথায় কোন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে যেয়ে সমস্যায় পড়েছেন। অবশ্যই আমি তদন্ত করে দেখবো যে কি সমস্যাটা হয়েছিল, কেন হলো, কেন পারলেন না। এটা তো না পারার কথা না।’
তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছি। এমনকি আমরা রোড শোও করছি।
একশটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রবাসীদের বিনিয়োগ করার সুযোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কীভাবে বিনিয়োগ করতে হবে বা করলে আপনাদের অসুবিধা হবে না ইতোমধ্যে বিডাতে (বাংলাদেশ বিনিয়োগ ও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) সব ধরনের নির্দেশনা দেওয়া আছে। যারা আপনারা বিডাতে অনলাইনে গেলে সব পেয়ে যাবেন।’
দেশে প্রচুর বিদেশি বিনিয়োগ আসছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে দেশে বিদেশি বিনিয়োগ ব্যাপকভাবে আসছে। আমি এইটুকু বলবো যে বাংলাদেশকে আমরা সার্বিকভাবে উন্নতি করে দিচ্ছি।’
আরও পড়ুন : ছয় হাজার ৫৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে একনেক -এ ৯ প্রকল্পের অনুমোদন
দেশে রেমিট্যান্স পাঠালে তার ওপর প্রণোদনা দেওয়া প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২ শতাংশ প্রণোদনার দাবি কেউ উঠাননি। এটা কোনদিন কারো মাথাও আসেনি। স্বেচ্ছায় আমি নিজে থেকে দিয়েছিলাম।’
এদিকে ১০ উপজেলায় এখনো কিছু হতদরিদ্র আছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জেনে খুশি হবেন আমাদের প্রায় ৪৯৫টি উপজেলা এবং প্রত্যেকটা ইউনিয়ন আমরা কিন্তু সার্ভে করি। এই সার্ভে করে পেলাম যে, মাত্র ১০টি উপজেলায় এখনও কিছু দরিদ্র আছে। এখনো কিছু দরিদ্র মানুষ আছে। মাত্র ১০টি উপজেলায় সেই কুড়িগ্রামের ২-৩টা, দিনাজপুরের একটা এ রকম কয়েকটা। ’
শেখ হাসিনা বলেন, আমি ইতোমধ্যে নির্দেশ দিয়েছি এই ১০ জায়গা থেকে কি কারণে এখনো মানুষ বেশি দরিদ্র আছে। এটা দেখতে হবে। এই দারিদ্রতা কিভাবে দূর করবো তার প্ল্যান প্রোগাম করতে, ইনশাল্লাহ কয়েক মাসের মধ্যেই আমরা এই অবস্থার পরিবর্তন করে ফেলব। কাজেই বাংলাদেশে আর হতদরিদ্র থাকবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে যেমন আমি শুনলাম আমার বিরুদ্ধে অনেক ডেমোনেস্ট্রেশন দেওয়া হচ্ছে। আমার প্রশ্ন আমি অন্যায়টা কী করেছি? আমি বাংলাদেশের উন্নতি করেছি, দারিদ্রের হার কমিয়েছি, দেশের মানুষকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছি?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা আন্দোলন করে আমার বিরুদ্ধে। কেন? সেটা আমার প্রশ্ন। দেশের উন্নতি করেছি এটাতো তাদের কাছে অপরাধ। তাহলে এর অর্থটা কি দাঁড়ায় এরা স্বাধীনতা চায় না। দেশের উন্নতি চায় না। দেশের মানুষের ভাগ্য ফিরুক সেটা চায় না।
নিউইয়র্ক ও টরেন্টোর সঙ্গে ঢাকার সরাসরি বিমান যোগাযোগ শুরুর আশাবাদ ব্যক্তি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরাসরি নিউইয়র্ক এবং টরেন্টোতে যাতে আমাদের প্লেন যায় তার জন্য আমাদের নেগোসিয়েশন চলছে। আশা করি সেটাও হয়ে যাবে।’
কনফারেন্স অব পার্টিজের (কপ) ২৬তম আসরে যোগ দিতে ৩১ অক্টোবর গ্লাসগোতে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৩ নভেম্বর গ্লাসগো সফর শেষে লন্ডন যাবেন তিনি। এর পর ৯ নভেম্বর লন্ডন সফর শেষে দ্বিপাক্ষিক সফরে প্যারিস যাবেন শেখ হাসিনা। দুই সপ্তাহের সফর শেষে ১৪ নভেম্বর দেশে ফেরার কথা প্রধানমন্ত্রীর।