রোজার মাসে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছুটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা প্রদান সংক্রান্ত গুজব ছড়ানো হচ্ছে; যা অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত। এসব গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে গুজব রটানোকারীদের চিহ্নিত করে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, রোজার মাসে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিপাঠদান পূর্বঘোষিত তারিখ ও সময় অনুযায়ী চলবে। করোনাকালীন ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ২০ রোজা পর্যন্ত দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চালু রাখার সিদ্ধান্ত আগেই জানিয়েছে সরকার।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গত ২২ মার্চ জারি করা নির্দেশনা মোতাবেক, ২০ রমজান পর্যন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান কার্যক্রম চালু থাকবে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ২৪ মার্চ জারি করা পৃথক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২০ রোজা পর্যন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান চলবে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলবে। এ সময়ের মধ্যে নামাজ পড়ার জন্য ৩০ মিনিট বিরতি পাবে শিক্ষকরা।
এদিকে প্রাথমিকের মতো মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরেও আগামী ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত শ্রেণিকক্ষে পাঠদান চালু রাখার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
গতকাল সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এ সংক্রান্ত আদেশে জানিয়েছে, করোনার কারণে দীর্ঘদিন শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত শ্রেণিকক্ষে পাঠদান অব্যাহত রাখার অনুরোধ করা হচ্ছে। আদেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত মোতাবেক এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেই শুরু হচ্ছে সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র মাহে রমজান। প্রতিবছর রোজার মাস ঘিরে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকে। তবে করোনার দুই বছরে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা অনেকটা ব্যাহত হওয়ায় ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবছর রোজার মাসে স্কুল-কলেজে ক্লাস চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
এর আগে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, অন্যান্য বছর রমজানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও এবার ক্লাস চালু থাকবে। তবে ঈদের স্বাভাবিক ছুটি বহাল থাকবে।
দেশে মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। দীর্ঘ ১৮ মাস পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে খুলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর চার মাস যেতে না যেতেই চলতি বছরের শুরুতে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ২১ জানুয়ারি ফের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয় সরকার। যা বহাল ছিল ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
এরপর পর্যায়ক্রমে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয় সরকার। সবশেষ মার্চের প্রথম সপ্তাহে খুলে প্রাথমিক বিদ্যালয়। বর্তমানে প্রাক-প্রাথমিকেরও শ্রেণিকক্ষে পাঠদান চলছে।